"প্রকৃতির শক্তি বোঝার ক্ষমতা মানুষের নেই, একদিনে হাজার হাজার মানুষকে গৃহহীন করে দিলো"

আমার দেখা দীঘার শান্ত সমুদ্র আজ বড্ড উত্তাল IMG_20210527_000705.jpg

প্রিয়,
পাঠকগণ,

কেমন আছেন আপনারা সবাই?

সত্যি বলতে আজ মনটা একদমই ভালো নেই,যদিও বা মনে মনে জানতাম "ইয়াস" বেশ শক্তিশালী হয়েই ধেয়ে আসছে, তবুও মন খারাপ লাগলে কোনো শান্তনাতেই খারাপ লাগা কমে না তাই না?

যদিও কলকাতার পার্শ্ববর্তী এলাকায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি,কিন্তু উপকূলবর্তী এলাকায় মানুষের পরিস্থিতি চোখে জল এনে দিচ্ছে।

চোখের সামনে নিজের বাড়ি ভেসে যেতে দেখে মানুষের আর্তনাদ গুলো কিছুতেই মনকে শান্ত হতে দিচ্ছে না।

এবার ঝড়ের বেগের থেকেও বেশী ক্ষতি হয়েছে জলের বেগে। আসলে আজ ভরা পূর্ণিমা,এমনিতেই পূর্ণিমায় জলে জোয়ার আসলে জলস্তর অনেকটা ওপরে উঠে আসে,তার উপর আবার এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ। দুটো মিলে আজ সমুদ্র সৈকতে যেন তান্ডপ চালিয়েছে।

খবরগুলো দেখে মনটা সত্যিই খারাপ।আমরা হয়ত কিছুই তেমন ভাবে বুঝতে পারিনি,তবে কিছু মানুষের তো সবকিছুই হারিয়ে গিয়েছে এই ইয়াসের কারণে। তারা সত্যিই জানে না,সবটা কিভাবে ঠিক হবে।

এই দিশেহারা মানুষ গুলোর চোখের জল দেখে নিজের চোখের জল বাঁধ মানে না। কারন এমন পরিস্থিতি আমিও নিজের চোখে একসময় দেখেছি।

২০০০ সালের বন্যার সময় আমাদেরও প্রায় ২ মাস বাড়ি ছেড়ে থাকতে হয়েছিল।তখন আমি যদিও ছোটো ছিলাম।বাবা মায়ের মত ওতো সমস্যা বুঝতে পারিনি, তবে জলের স্রোতের ভয় সেবার পেয়েছিলাম। যাক সেই গল্প অন্য একদিন করবো।

আজ অনেক মানুষকে ঘর ছাড়া হতে দেখে কিছুক্ষণের জন্য পুরোনো দিন মনে পড়ল।নিজেদের বাড়ি ছেড়ে যেতে চাইছে না মানুষ গুলো,কিন্তু প্রাণ বাঁচাতে তাদেরকে জোর করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সরকার ও প্রশাসনের সাহায্যে তাড়া আশ্রয় পাচ্ছে বিভিন্ন ক্যাম্পে। তাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যাবস্থা সেখানেই করা হচ্ছে।প্রাণ বাঁচলে আবার নতুন করে কিছু করা সম্ভব তাই সেই চেষ্টাই করে চলেছে সকলে।

আর একটা বিষয়ে কথা না বললেই নয়।আজ আমি সংবাদমাধ্যমকে কুর্নিশ না জানিয়ে পারছি না।কি দুঃসাহসিকতার সাথে তাড়া প্রতি মুহূর্তের খবর পৌঁছে দিচ্ছে মানুষের কাছে।এমনকি নিজেদের জীবনের পরোয়া না করেই ঝড়ের মুখে দাঁড়িয়ে প্রকৃতির বিভিন্ন রূপ তুলে ধরছে আমাদের জন্য।

এক নামী টিভি চ্যানেলের একটি গাড়ি ভেসে গিয়েছে দীঘার রাস্তার উপর থেকে।জলের স্রোতের এতটাই গতি ছিল যে একটা গাড়িকে এক ধাক্কায় ভাসিয়ে নিয়ে চলে গেছে,ভাবতে পারছেন?

IMG-20210527-WA0006.jpg

গাড়ির চালককে কোনো রকমে প্রাণে বাঁচানো গেলেও গাড়িটিকে রক্ষা করা যায়নি। যিনি ওই গাড়ির থেকে সাংবাদিকতা করছিলেন তিনি একজন মহিলা।অনেক কষ্টে তাকেও টেনে এনে প্রাণে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে,সেকথা বলার সময় তার কান্না আর পাশে তার গাড়ির চালকের কান্না যেন কানে ভাসছে এখনও।
মৃত্যুকে একেবারে কাছ থেকে দেখে আসা যাকে বলে।ভয়ে,আতঙ্কে তারা ঘিরে রয়েছে।

এই মানুষগুলোকে কুর্নিশ জানাতেই হয়।নাহলে মানুষ হিসাবে নিজেকে বড্ড ছোটো মনে হয়। নিজের সুরক্ষার দিকে না তাকিয়ে নিজের কাজ করে যাওয়ার এই মনোবলকে সত্যিই সেলুট 🙏

যাইহোক, আমাদের এখানে আমফানের মত ক্ষতি হয়নি ঠিকই,তবে মানসিক দিক থেকে সত্যিই ভেঙে পড়েছি। প্রকৃতির আর কি কি রূপ দেখতে হবে জানিনা। তবুও বলবো,ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আর অবশ্যই সাবধানে থাকবেন।শুভরাত্রি।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now
Logo
Center