আসসালামু আলাইকুম। ব্যক্তিগত জীবনের তাগিদে দীর্ঘদিন নেটওয়ার্কের বাহিরে ছিলাম। আবারও ফিরলাম চিরচেনা এই প্লাটফর্মে। যেখানে মুক্ত স্বাধিনতা রয়েছে সবার সব মতামতের। এখানে অনেকেই আসলে নতুন হিসেবে চিনবেন আমাকে। আমি ইতিপূর্বে লেখালেখি করেছি এবং কমবেশি অভিজ্ঞতা আছে ইনশাআল্লাহ। জীবন সমস্যার কারণে দীর্ঘদিন অফলাইনে ছিলাম। আবারও আপনাদের সাথে সুন্দর সময় কাটাতে চাই।
রঙ বেরঙের এই জীবনে নানান রকম পথ পেরিয়ে এগিয়ে যেতে হয় আসলে। আমরা স্বাভাবিক জীবনে যেভাবে চলি, যেভাবে চিন্তা করি, ঠিক উল্টো একটা পৃথিবী থাকে অনেকের জীবনে। যেখানে তিনবেলা খাবার তো দূরের কথা, ১ বেলা খাবারও ঠিকমতো জুটে না। অসুস্থ শরীর নিয়ে দিনের পর দিন ঠিক এভাবেই হুমরি খেয়ে পরে থাকতে হয়, দেখার, বলার কিংবা শুনার কেউ থাকে না। তেমনি একজন মানুষের কথা বলছি, যাকে ঢাকায় আসার পর থেকে এই রোডের এই যায়গায় প্রতিনিয়ত শুয়ে বসে থাকতে দেখি সকাল বিকাল। ঠিকমতো কথা বলতে পারেনা। তাকে কেউ টাকা পয়সা দিলে সেটাও নেয় না। খুব কষ্টে জীবন যাপন করেন।
লোকের থেকে শুনছি, এই মানুষটি এক সময় অনেকটা স্বাভাবিক ছিলো। চলাফেরা, কথাবার্তা, খাওয়া দাওয়া সবকিছুই ঠিক ছিলো। কিন্তু কি কারণে এই অবস্থা হয়েছে উপর ওয়ালা ব্যতিত কেউ জানেনা। আজ আমি অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করছি কিন্তু ঠিকমতো কোনো সাড়া পাচ্ছিলাম না। লোকটিকে বহুদিন হয়ে যায় এই পথের ঠিক এই একই যায়গায় শুয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। ঢাকার এই উত্তর বাড্ডা থানা রোডে নিত্যদিন তাকে এভাবেই দেখি। খুব খারাপ লাগে, ইচ্ছা থাকলেও সামর্থ্য নেই লোকটিকে সুস্থ করার কিংবা ভালোমন্দ খাওয়ানোর।
আল্লাহ ভালো জানেন, তবে খুব বেশিদিন হয়তো এভাবে আর দেখতে পাবোনা লোকটিকে। দিনের পর দিন লোকটির সকল বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন হচ্ছে। কেউ তার পাশে নেই। কিন্তু এই একই লোক যদি আজ স্বাভাবিক থাকতো, টাকা পয়সা, বাড়ি গাড়ি, সম্পদ থাকতো সবাই তার পাশে থাকতো।
কি অদ্ভুত জীবন আমাদের। ক্ষণস্থায়ী এই জীবনটাকে যেনো সবাই চিরস্থায়ী ভেবে চলি। কেউ কারো পাশে থেকে কাউকে সাহায্য করার মানসিকতার বড়ই অভাব আজকাল। সাহায্যের হাত আমাদের অনেক ছোট। অথচ আল্লাহ চাইলে আমাকে কিংবা আপনাকেও ঠিক এই লোকটার মতো বানাতে পারতো। কিংবা ভবিষ্যতেও পারে। আমরা এগুলো ভাবিনা। অধিকাংশ মানুষই ভাবে না। তবে কিছু মানুষ মানুষের জন্য আজও কাজ করে যাচ্ছেন, আল্লাহ তাদের কে হেদায়েত দান করুক। আমিন।
Who am I?