প্রতিদিন খালি পেটে দুটি করে নিম পাতা খেয়েই দেখুন!
হাজার বছরে ধরে নিম পাতার গুণগান গেয়ে আসছেন আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটির শরীরে মজুত রয়েছে কম-বেশি ১৩০টির মতো বায়োলজিকাল কম্পাউন্ড, যা নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে।
তাই নিম পাতা খেলে শরীরের তো কোনও ক্ষতি হয়ই না, বরং দেহের ভেতরে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টি-ম্যালেরিয়াল, অ্যান্টি-মাইক্রাবিয়াল এবং অ্যান্টি-ভাইরাল প্রপাটিজের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। আরও আছে ...
ড্রাই স্কিন : শুনতে আজব লাগলেও সত্যিই কিন্তু ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফেরাতে নিম পাতার কোনওবিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটির ভেতরে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা শরীরে প্রবেশ করার পর ত্বকের ভেতরে পানির ঘাটতি দূর করতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে ড্রাই স্কিনের সমস্যা মিটতে সময় লাগে না।
আলসার : নিয়মত নিম পাতা এবং নিম গাছের ছাল খাওয়া শুরু করলে স্টমাক এবং ইন্টেস্টিনাল আলসারের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, ম্যালেরিয়া এবং একাদিক ত্বকের রোগের চিকিৎসাতেও কিন্তু এই দুটি প্রকৃতিক উপাদান দারুন কাজে আসে।
ডায়াবেটিস : নিয়মিত নিম পাতা খাওয়া শুরু করলে শরীরের ভেতরে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া আশঙ্কা আর থাকে না বললেই চলে। আর এমনটা যখন হয়, তখন ডায়াবেটিসের মতো রোগ যে ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না, তা তো বলাই বাহুল্য!
ত্বকের সৌন্দর্য : নিয়মিত নিম পাতা খাওয়ার অভ্যাস করলে রক্তে উপস্থিত নানাসব টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যায়।
ফলে ত্বক ভিতর থেকে সুন্দর হয়ে ওঠে। এই প্রকৃতিক উপাদানটির শরীরে উপস্থিত অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ ত্বকের সংক্রমণ, পুড়ে যাওয়া সহ নানবিধ স্কিন প্রবলেম সারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
দৃষ্টিশক্তি : এক্ষেত্রে দুভাবে নিম পাতাকে কাজে লাগাতে পারেন। এক, প্রতিদিন নিম পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা পাতাটা পানিতে ফুটিয়ে, সেই পানি ঠাণ্ডা করে চোখে লাগাতে পারে। যে কোনও একটা পদ্ধতি অনুসরণ করলেই দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটতে শুরু করবে। চোখের ইরিটেশন, ক্লান্তি এবং লাল ভাবও কমবে। আজকাল দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করলে অনেকেরই চোখ লাল হয়ে যায়, যন্ত্রণা করে। এমন ধরনের সমস্যা কমাতে নিম পাতা দারুন কাজে আসে।
হজম ক্ষমতা : নিম পাতায় থাকা একাধিক উপকারি উপাদান পাকস্থলিতে উপস্থিত নানাবিধ ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলে। সেই সঙ্গে লিভার এবং কোলনের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে।
চুল : নিম পাতায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অক্সিডাইজ স্ট্রেসের হাত থেকে চুলকে রক্ষা করে। সেই সঙ্গে চুলের বৃদ্ধিতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। নিমপাতা পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে খুশকির সমস্যা একবারে নিমূল হয়ে যায়।
দাঁত : নিয়মিত নিম পাতা চিবুলে এই প্রকৃতিক উপাদানটির মধ্যে থাকা একাদিক স্বাস্থ্যকর উপাদান দাঁতের একেবারে উপরের স্থর, এনামেলকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে দাঁতের ক্ষয় হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। নিমে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ মুখ গহ্বরে বাসা করে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলে। সেই সঙ্গে স্যালাইভায় অ্যালকালাইন লেভেল যাতে ঠিক থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে দাঁতের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
রোগ প্রতিরোধ : নিম পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রপাটিজ, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষণতাকে শক্তিশালী করে তোলার পাশাপাশি নানাবিধ সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তে জমতে থাকা টক্সিক উপাদানদের শরীর থেকে বার করে দেয়। ফলে ক্যান্সার থেকে ছোট-বড় নানা রোগ, কোনটাই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।