- স্যার আপনাকে একটা কথা বলি?
- হুম বলো......
- আগে বলুন রাগ করবেন না?
- আচ্ছা ঠিক আছে।
- আমার সাথে একটু শপিংমলে যাবেন?
প্লিজ স্যার না করবেন'না। না করলে আমি কষ্ট
পাব।
.
না করার কোনো অপশন নেই! কারন দুইটা টিউশনি
করিয়েই আমার লেখাপড়ার খরচ চলে। তাই
আদিবার কথামতো রাজি হয়ে গেলাম। - আচ্ছা চলো.....
- আপনি খুব ভালো স্যার।
.
অবাক করার বিষয় হলো আদিবা আজকে যা কিনছে
সব ছেলেদের পোশাক, তাও আবার আমার শরীরের
মাপ অনুযায়ী। একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, -
আমার শরীরের মাপ কেন? - পরে বলবো।
.
শপিংমল থেকে বের হয়ে একটা রিকশা নিলাম!
আদিবাকে তার বাসায় নামিয়ে দিয়ে আমি মেসে
চলে যাব।
আমার পাশেই বসে আছে মেয়েটি। রিকশা যখন
একটা ব্রিজের মাঝ বরাবর গেল! তখন আদিবা
বলে উঠলো, - মামা রিকশা থামান।
আমি বললাম, - এখানে আবার কি?
- স্যার ব্রিজের উপর থেকে নদীর পানি দেখবো।
- ওহ্ আচ্ছা।
রিকশা থেকে নেমে কিছুদূর যাওয়ার পর, আদিবা
বললো, - স্যার আপনার হাতটা একটু ধরতে পারি?
আমি বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গেলাম!
.
মেয়েটা আমার হাত ধরে হাটছে! দক্ষিণের ধমকা
এসে মাঝেমধ্যে ওর চুলগুলোকে এলোমেলো করে দিচ্ছে!
আমি নিরব হয়ে ভাবছি, একটা মেয়ে এতোটা সুন্দর
হয় কি করে! সত্যিই..... তুলনা হয় না।
কিছুক্ষণের জন্য ভুলেই গিয়েছিলাম, আমরা যে,
ছাত্রী আর শিক্ষক।
প্রায় ১০মিনিট পর আদিবা বললো, - স্যার আপনার জন্য! (শপিংব্যাগ'গুলো হাতে
দিতে দিতে)।
আমি অবাক হয়ে বললাম, - কেন???
- গিফট্!
- আমি তোমার উপহার নিবো কেন?
- নিতে পারেন না কেন?
- কারন আমি তোমার শিক্ষক আর তুমি আমার
ছাত্রী! - এতে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে!?
- না, তবুও সম্ভব না।
- তাইলে ওই যে নদীটা দেখছেন, ওখানে ফেলে
দিন।
.
ফেললাম না! ভাবছিলাম, যাওয়ার সময়
আদিবাকে শপিংগুলো দিয়ে দিব। এই ভেবে রিকশার
দিকে হেটে যাচ্ছি!
এমন সময় আদিবা বলে উঠলো, - স্যার সকালে যখন
আপনি আমাকে পড়াতে আসেন! তখন আপনাকে
দেখে আমার খুব খারাপ লাগে! একটা শার্ট
প্রতিদিন পড়ে আসেন! জুতাগুলো সেই প্রথম থেকেই
দেখছি.....
হঠাৎ মেয়েটাকে থামিয়ে দিয়ে বললাম! - ওহ্
তাহলে এজন্যেই তুমি আমাকে করুণা করছো?! দেখো
তোমার ইচ্ছে না হলে আমার কাছে পড়োনা! কিন্তু
আমাকে অপমান করার কোনো অধিকার তোমার
নেই!!!
!
এবার মেয়েটা কেঁদে দিলো! কান্নাজড়ানো কন্ঠে
বললো, - না স্যার! আপনাকে অপমান করার
কোনো ইচ্ছা আমার নেই। কিন্তু আপনার জন্য
আমার বান্ধবীরা আমাকে অপমান করে!!!
কিছুদিন আগে মারিয়া বললো, তোর স্যার সবসময়
গেঁয়ো বেশে থাকে! একটু গোছালো করতে পারিস
না?!!!
কিন্তু আমি কোনো জবাব দিতে পারিনি! আপনাকে
অতিরিক্ত টাকাও দিতে পারিনি! জানি, রাগ
করবেন! কারন আপনার ব্যাক্তিত্ববোধ একটু
বেশীই।
.
অপেক্ষায় ছিলাম কোনদিন আপনার জন্মদিন
আসবে! আমি সেদিন আপনাকে গিফট দিবো। আর আজ
সেই দিনটা! ভাবছিলাম বাসায় যখন নামিয়ে
দিবেন, তখন উইশ করে চমকে দিব!! কিন্তু আপনি......
.
থমকে গেলাম!!! একটা মেয়ে আমাকে এত গুরুত্ব
দেয়! আর আমি তাকে অপমান করলাম! ছিঃ - সরি আদিবা! আমাকে মাপ করে দাও।
- না হবে না। আমি যাই.....
- শপিংগুলো দিবা না?
- না! নিতে হবে না!
মেয়েটা চলে যাচ্ছে!
এমন সময় সাহস করে পিছন থেকে হাতে ধরে
ফেললাম!!! - তাও হবে না! বুকে জড়িয়ে ধরতে হবে!
- তুমি এতো দুষ্টু?!!! (ধমক দিয়ে বললাম)
- আপনার সাথে করবোনা তো কার সাথে করবো?!
- মানে?
- মানে আপনি আমার ভবিষ্যৎ বর।
- কে বলছে?
- আমার আব্বু আর আম্মু যখন কথা বলছিলো তখন
আমি লুকিয়ে থেকে সব শুনছিলাম। - কি বলছিলো?
- আপনি খুব ভালো! আপনার সাথে আমার বিয়ে
দিবে!
তাই ভাবলাম প্রেমের কাজটা বিয়ের আগেই সেরে
নিই!!! - তুমি এতো পাকনা হলে কোনদিন থেকে?
- জানিনা! এবার জড়িয়ে ধরুন বলছি। (একটু ধমক
দিয়ে) - না আমি পারবো না।
- তাহলে আমি শিখিয়ে দিই?
- হুম দাও......
অতঃপর বুকের মাঝখানে উষ্ণতা অনুভব করলাম!
কেউ যেন পাজর মেলে আমাকে জড়িয়ে ধরছে!!!
.
এমন সময় রুমমেট দিলো ডাক! - কিরে দোস্ত তুই কোলবালিশের সাথে এমন করতেছিস
কেন?!!!😁😁😁